সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা। পঞ্চম দিনের মতো শাহবাগেও বিশাল জমায়েত করেছেন আন্দোলনকারীরা।
সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র গত ৫ই জুন হাইকোর্টে বাতিল করার পর থেকে তীব্র আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমাজের’ ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীরা গত কয়েক সপ্তাহে পদযাত্রা, সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন।
সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় গতকাল শনিবার ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। বিকেল তিনটা থেকে কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আগে থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে বের হতে থাকেন তারা।
সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে সাইন্সল্যাব, নীলক্ষেত মোড়, চানখারপুল মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন। সঙ্গে সঙ্গে এসব এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের একটি বিশাল মিছিল ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগের দিকে এগোতে থাকে। প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর এ মিছিলটি শাহবাগ মোড়ে গিয়ে সেখানে অবস্থান নেন।
পরে মিছিলের একটি অংশ সামনে এগিয়ে গিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল সংলগ্ন সড়কও অবরোধ করে। শাহবাগ ও বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলনকারীদের ঘিরে পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য অবস্থান নিয়েছেন।
বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিলেও বড় অংশই মূলত জড়ো হয়েছেন শাহবাগ মোড়ে। তারা রাস্তায় বসে সমস্বরে ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’-ইত্যাদি স্লোগানে উত্তাল করে রেখেছেন শাহবাগ এলাকা। গান-কবিতা, গল্পেও চলছে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ।
Recent Comments