কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি ছাত্রছাত্রী এবং তাদের সহযোগীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের তদন্ত দাবি করে প্যালেস্টাইন লিগ্যাল ইউএস গত ২৫ এপ্রিল এপ্রিল বৃহস্পতিবার ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন অফিসে অভিযোগ দায়ের করেছে। যার মধ্যে দাঙ্গা পুলিশ প্রথমবারের মতো কয়েক দশকের পর গত সপ্তাহে ইসরায়েলের গণহত্যার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারী শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে গ্রেফতার করতে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
কলাম্বিয়ায় বিক্ষোভকারীদের সরানোর জন্য ন্যাশনাল গার্ড আনা যেতে পারে বলে পরামর্শ দেওয়ার একদিন পরে প্যালেস্টাইন লিগ্যাল ইউএস অভিযোগটি দায়ের করে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কীভাবে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি ছাত্রছাত্রী, আরব, মুসলিম ছাত্রছাত্রী এবং তাদের সমর্থনে অন্য ধর্মের বিক্ষোভকারী ছাত্রছাত্রীদের টার্গেট করা হয়েছে। তাদের মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হচ্ছে, হিজাব পরার জন্য হয়রানি করা হচ্ছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মিনোচে শফিকসহ উচ্চপদস্থ প্রশাসকরা বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আক্রমণে কমপক্ষে ১০ জন ছাত্রছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় এবং ফিলিস্তিনি ছাত্রছাত্রীসহ আরো কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।
মামলায় প্যালেস্টাইন লিগ্যাল ইউএস চারজন ছাত্র এবং কলাম্বিয়া স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন (এসজেপি) ছাত্রছাত্রী প্রতিনিধিত্ব করছে। যার মধ্যে রয়েছে সহকর্মী, অধ্যাপক বা কলম্বিয়ার প্রশাসক দ্বারা বৈষ্যমের শিকার হয়েছেন তারা।
মরিয়ম আলওয়ান বলেন, একজন ফিলিস্তিনি ছাত্রী হিসেবে আমি সহকর্মী ছাত্র এবং অধ্যাপকদের দ্বারা হয়রানি এবং বৈষম্যের শিকার হয়েছি। শুধু আমার পরিচয় এবং আমার নিজের অধিকার ও স্বাধীনতার পক্ষে ওকালতি করার কারণে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার অধিকার রক্ষা করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তাতে আমি আতঙ্কিত। এর বাইরেও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার জন্য আমাকে গ্রেফতার ও তা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় এই দমনপীড়নে ভূমিকা পালন করেছে। শান্তিপূর্ণ যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদকারী হিসেবে আমরা যে সহিংসতা ও দমনপীড়নের সম্মুখীন হচ্ছি তা ভয়ঙ্কর। তিনি আরো বলেন, আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের কয়েক দশক ধরে চলা নিপীড়ন এবং সহিংসতার জন্যই নয়, কলাম্বিয়া ক্যাম্পাসে আমরা এখানে যে বর্ণবাদ ও বৈষম্য অনুভব করেছি, তার জন্যও আমাদের এই প্রতিবাদ।
মরিয়ম আলওয়ান আরো বলেন, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ফিলিস্তিনি ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বর্ণবাদ এবং বৈষম্যের জন্য সক্রিয়ভাবে অবদান রেখেছে। যার ফলে আমরা মানসিক এবং শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। উদাহরণস্বরূপ, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, লাঞ্ছিত করা হয়েছে, তাদের ক্লাস তালাবদ্ধ করা হয়েছে, ক্লাস ছেড়ে দিতে এবং তাদের পরীক্ষা বিলম্বিত করতে বাধ্য করা হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারী ছাত্রছাত্রীদের সহিংসভাবে গ্রেফতার করার জন্য দাঙ্গা পুলিশ আনা হয়েছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে ন্যাশনাল গার্ডকে দিয়ে তাদের নিজস্ব ক্যাম্পাস থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হবে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির দায়িত্ব রয়েছে তার ছাত্রছাত্রীদের রক্ষা করার।
প্যালেস্টাইন লিগ্যাল ইউএস স্টাফ অ্যাটর্নি সাবিয়া আহমেদ বলেন, চলমান গণহত্যার মধ্যে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার আহ্বান জানিয়ে ছাত্র বিক্ষোভের ওপর কলম্বিয়ায় ভয়ংকর দমনপীড়ন আমাদের সবাইকে শঙ্কিত করেছে। আমরা ফেডারেল নাগরিক অধিকার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাই যে, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের অধিকার রক্ষায় লজ্জাজনকভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
Recent Comments