ঢাকা ছাড়া লোডশেডিংয়ের শিডিউল অন্য কোথাও মানা হচ্ছে না। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণকারী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিরুদ্ধে। সরকার থেকে একঘণ্টা করে লোডশেডিংয়ের কথা বলা হলেও কমপক্ষে তিন-চার ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকছে না। গভীর রাতেও চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে বিস্তর সমালোচনা।
ঝিনাইদহের বাসিন্দা জোনায়েদ চৌধুরী জানান, ‘সোমবার রাত ১২টা থেকে দুপুর ৩টা; এই ১৫ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচবার আধঘণ্টা থেকে একঘণ্টা করে বিদ্যুৎ ছিল না। তিনি আরো বলেন, গতকাল শুনলাম সব জায়গায় এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে। মফস্বলের জন্য যেমন খুশি তেমন লোডশেডিংয়ের রুটিন করা হয়েছে নাকি!’
জানতে চাইলে বগুড়া জেলার বাসিন্দা রবিন বলেন, দিনে সাধারণত বেশ কয়েকবার করেই লোডশেডিং পাই আমরা। এখনও একই আছে। সন্ধ্যার পরও কয়েকবার বিদ্যুৎ যায় বলেও জানান তিনি।
আরইবি সূত্র বলছে, দিনের বেলায় আগে থেকেই তারা চাহিদার ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ পাচ্ছিলেন। এখন সন্ধ্যার পরও বিদ্যুৎ কম দেওয়া হচ্ছে। তারা বলছে, এ কারনে রাতে অন্তত দুই ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
সূত্র আরও বলছে, তাদের সারা দেশে প্রায় ৮ হাজারেরও বেশি ফিডার আছে। এগুলোকে ভাগ করে কোথায় কখন কতটুকু লোডশেডিং করা হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। তারা আরো বলছে, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা লোডশেডিংয়ের তালিকা করে সেই অনুযায়ী লোড ম্যানেজমেন্ট করবে।
জানতে চাইলে মাগুরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) সন্তোষ কুমার ঘোষ বলেন, আমরা যতটা পারছি লোড ম্যানেজমেন্ট করছি। তিনি বলেন, দিনে চাহিদার চেয়ে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ কম পাচ্ছি। রাতে যা পাচ্ছি তা দিয়ে দুইবার দেড় ঘণ্টা করে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) বলেন, আমাদের চাহিদা ১৫১ মেগাওয়াটের। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ পেলেও কোনও মতে চালাতে পারি। সেখানে আজকে (১৯ শে জুলাই) মুক্তাগাছায় ৪৬ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে দেওয়া হয়েছিল৫ মেগাওয়াট। পরে দুই মেগাওয়াট বাড়ানো হয়েছিল।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তাও বলেছেন একই কথা।
এদিকে বিশ্ব জ্বালানি পরিস্থিতির কারণে দেশে সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এজন্য লোডশেডিংয়ের একটি শিডিউল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দেশব্যাপি বিতরণ কোম্পানিগুলোকে। বিষয়টি আগেভাগে গ্রাহকদের জানানোর নির্দেশনাও রয়েছে। তবে এখনও সব বিতরণ সংস্থা এই নির্দেশ অনুযায়ী কাজ শুরু করতে পারেনি।
রাজধানী ঢাকার দুই বিতরণ কোম্পানি ডিপিডিসি ও ডেসকো তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া শিডিউল অনুযায়ী লোডশেডিং করছে। একইসঙ্গে রাত ৮টার পর দোকানপাট বন্ধে মাইকিংও করছে তারা।
গেল সোমবার (১৮ ই জুলাই) রাত ৮টার পর বিপণি বিতান খোলা রাখায় সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে ঢাকার বেশ কিছু এলাকায়
Recent Comments