আতঙ্ক ছড়ানোয় বিভিন্ন স্থানে বেড়েছে সাপ মারার প্রবণতা। রাসেলস ভাইপার নিয়ে এখন সবখানে সচেতনতার চেয়ে আতঙ্কই বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃতির ভারসাম্যে সাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতার পরামর্শ তাদের।দেশের বিভিন্ন জায়গায় রাসেলস ভাইপার বা এ সন্দেহে সাপ মারার প্রবণতা বেড়েছে। এ প্রবণতার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বাস্তুসংস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, সাপের বিরুদ্ধে মানুষকে উত্যক্ত করে দেয়া হচ্ছে। যেহেতু এটা সবার ঘরে ঘরে চলে আসছে এবং তাদেরকে মেরে ফেলার একটা প্রবণতা হচ্ছে। ইদুররা যে ফসলগুলো নষ্ট করে ফেলে এই রাসেলস ভাইপারই কিন্তু তাদের খেয়ে ফেলে। তারা খেয়ে ফেলে বলেই তো আমরা এতগুলো ফসল পাচ্ছি।
রাসেলস ভাইপার নামটি অনেকের কাছে নতুন মনে হলে- মোটেও নতুন কোন সাপের প্রজাতি নয় এটি। বরেন্দ্র অঞ্চলের চন্দ্রবোড়া নামে এই রাসেলস ভাইপারের বিচরণ ছিল আগে থেকেই। সম্প্রতি চন্দ্রবোড়া বিচরণ ক্ষেত্র বিস্তৃত হয়ে নতুন ২৭টি জেলায় দেখা মিলেছে।
বিভিন্ন গবেষণার তথ্য অনুযায়ী দেশে বছরে অন্তত সাড়ে ৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় সাপের ছোবলে। এসব মৃত্যুতে রাসেলস ভাইপার কতটুকু ভূমিকা রেখেছে তা সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। তবে গেল এগারো বছরে রাসেলস ভাইপারের দংশনে রাজশাহীর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৯ জনের মৃত্যুর তথ্য আছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে।
তিনি আরও বলেন, সমগ্র দেশে রাসেলস ভাইপারের কতটা অস্তিত্ব এবং কামড়ে কতটা মৃত্যু হয়েছে এ ধরণের তথ্য কিন্তু আমাদের কাছে নেই। ছয় থেকে আট ঘণ্টার মধ্যে যারা আসছে তাদের প্রায় ৭০ ভাগের মতো আমরা মৃত্যু দেখলাম, তার মানে দেরি করে আসা এবং দেরি করে অ্যান্টিবানম প্রয়োগ করলেও অনেক ক্ষেত্রে রোগীগুলোর লাভও হচ্ছে না। বিশেষ করে রাসেলস ভাইপারের ক্ষেত্রে, যেভানে তীব্র রক্তক্ষরণ কিডনির একেবারে সমস্যা, কিডনি বৈকুন্য হয়ে যাওয়া, মাল্টি অর্গান ফেইলর হয়ে যাওয়া, এই ধরণের অনেকগুলো সমস্যা যখন হয়ে যায় তখন অ্যান্টিবানম একটা, দুইটা, তিনটা, চারটা ইভেন পাঁচটা ডোজ দেয়ার পরও আমরা দেখি যে রোগীগুলো মারা গিয়েছে।
সাপে কাটা বিষয়ক গবেষণার তথ্য বাংলাদেশে ৬১ শতাংশ মানুষ সাপে কাটার পর প্রথমে যায় ওঝার কাছে। এতে বাড়ে মৃত্যুঝুঁকি।
এই প্রজাতির সাপের বিচরণক্ষেত্র বিস্তৃত হবারই ইঙ্গিত দিচ্ছে বিশেষজ্ঞরা।
বিএসএমএমইউয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বী চৌধুরী বলেন, একশটা বাইট হলে ১২-১৫টা বাইট হবে বিষধর। বাকিগুলো ৮৫টা বাইটই কিন্তু বিষহীন। তাহলে ওঝার কাছে ১০০ জনের ৮৫ জনই কিন্তু ওঝা ভালো করে ফেলছে। এর জন্য মনে হচ্ছে তার সাকসেস এত ভালো। বাকি যে ১০-১২টা সে ভালো করতে পারছে না সেটা তে সে বিভিন্ন কারণ দেখাচ্ছে।
টক্সিকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক এম এ ফয়েজ বলেন, প্রতি বছরে একশো কিলোমিটার বহন করতে পারে, কাজেই আমাদের বাংলাদেশও ছোট দেশ, কাজেই ২০১৩ সাল থেকে এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এবং স্বাভাবিক প্রজনন ক্ষমতা যে রকম তাতে করে এদের সংখ্যাটা বাড়াই স্বাভাবিক।
Recent Comments