September 20, 2024
Latest news

রোহিঙ্গাদের ভারত থেকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের অবস্থান দৃঢ় -ডোজারিক

শরণার্থীদের জোরপূর্বক ঠেলে দেয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের অবস্থান অত্যন্ত দৃঢ়। শরণার্থীদের কেবল স্বেচ্ছায় তাদের নিজ দেশে নিরাপত্তা এবং সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠানোর সুযোগ করে দিতে হবে।

বুধবার জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক ভারত থেকে বাংলাদেশে পাঠানোর অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দায়ের করা আইনি প্রতিষ্ঠান গার্নিকা থার্টিসেভেন’র  অভিযোগ প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক। ব্রিফিংয়ে মিয়ানমারে জান্তা বাহিনীর বর্বরতা এবং নৃশংসতা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে বাংলাদেশ এবং ভারত সরকারের বর্তমান নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রশ্ন উত্থাপন করে জাতিসংঘের স্থায়ী সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী।

বাংলাদেশ সরকার আর কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেবেনা বলে যে ঘোষণা দিয়েছে সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ডোজারিক বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থীর বিষয়ক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন ।

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী তার প্রশ্নে জানতে চান, “বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে তারা আর কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিবেনা। তারা কী নতুন করে শরণার্থী নিতে সম্মত হয়েছে? ভারত জোরপূর্বক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে বলে সম্প্রতি গার্নিকা থার্টিসেভেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যে অভিযোগ দায়ের করেছে সে বিষয়ে জাতিসংঘের মন্তব্য কী?”

জবাবে ডোজারিক বলেন, “আপনার প্রথম প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, এ ধরনের কোন রিপোর্ট আমার চোখে পড়েনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আমাদের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ( ইউএনএইচসিআর)’র  সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানাই।”

তিনি বলেন, “অবশ্যই, রোহিঙ্গাদের একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে জায়গা করে দিয়ে বাংলাদেশ খুব উদারতার পরিচয় দিয়েছে। আমি মনে করি বাংলাদেশের বিভিন্ন কমিউনিটি উদারতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেখানে যেসব মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি তা অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সহযোগিতা চালিয়ে যাবে বলে আমি খুব আশাবাদী।”

ডোজারিক আরও বলেন, “আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নে বলবো, আমি এ বিষয়ে এখনো কিছু দেখিনি। কিন্তু আপনাকে বলবো, অনিরাপদ কোনো জায়গায় শরণার্থীদের জোর করে ঠেলে দেবার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত দৃঢ়।”

শরণার্থীদের কেবল  স্বেচ্ছায় তাদের নিজ দেশে নিরাপত্তা এবং সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠানো উচিত বলে উল্লেখ করেন এই মুখপাত্র।

উল্লেখ্য, ভারত থেকে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে পাঠানোর বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটরের কাছে আবেদন করেছে গার্নিকা থার্টিসেভেন।

২০১৬-২০১৭ সালের মধ্যে মিয়ানমারে পরিচালিত নৃশংসতার মুখে ভারতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কিভাবে ভারতের সরকার তাদের মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণার অংশ হিসাবে জোরপূর্বক তাড়িয়ে দিয়েছে তার বিস্তারিত আদালতে দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

গার্নিকা থার্টিসেভেন’র  পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার নীতি অনুসরণ করে ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত যারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছিলো তাদের ভারতে বসবাসের অনুমতি দিয়েছিলো দেশটির সরকার। ২০১৭ সালে মিয়ানমারে নৃশংসতা মাত্রা ছাড়ানোর সময়টাতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবৈধ অভিবাসী ঘোষণা করে এবং দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। এর ফলে ভারত ছাড়ার অপেক্ষায় থাকা অনেক হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। সরকারি উদ্যেগে কিছু রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো হলে সেসময়টাতে অনেকেই পালিয়ে বাংলাদেশ আসার সিদ্ধান্ত নেয়।”

আদালতে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, “ভারত কর্তৃপক্ষ কার্যত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে সরিয়ে দিচ্ছে যার তদন্ত করাটা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ম্যান্ডেটের মধ্যে পড়ে।”

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভারত সরকারের নীতির যে পরিবর্তন ঘটেছে সেটা বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণার নজির।”

Youtube

বিভাগসমূহ

Recent Comments
Scroll to Top
September 20, 2024

Editor & Publisher : Dr. Kanak Sarwar

© Copyright 2019-2024 Rajnity. All Rights Reserved