September 20, 2024
Latest news

শান্তিরক্ষা মিশনে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের অংশগ্রহণ চায়না যুক্তরাষ্ট্র-স্টেট ডিপার্টমেন্ট

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার কেন্দ্রবিন্দুতে দুর্নীতি দমন: মদদদাতা বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া প্রসঙ্গে

বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা কার্যক্রম আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার উন্নয়নে অবদান রাখে। মানবাধিকার সুরক্ষায় শান্তিরক্ষী কর্মীদের ভূমিকাও জরুরি।

মঙ্গলবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেবার পরও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ডেথ স্কোয়াড ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (ব়্যাব) এর সদস্যদের বাংলাদেশে থেকে নিয়োগ দেওয়া অব্যাহত রাখা প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদকে ব্যাপক দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়ার মূল হোতা ক্ষমতাসীন সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পদক্ষেপ নিবে কীনা জানতে চাইলে, বাইডেন প্রশাসনের এই কর্মকর্তা বলেন, দুর্নীতি দমনে যুক্তরাষ্ট্রের বিশদ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে শীর্ষ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং দুর্নীতি দমনকে রাখা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে কোনো আগাম ঘোষণা দেয়না।

ব্রিফিংয়ে শুরুতে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ব়্যাব এর সদস্যদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োগ দেওয়া অব্যাহত রাখা প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলে, সাডেচ সায়েতিং এবং নেত্র নিউজের রিপোর্টের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট করেসপন্ডেন্ট মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, “জার্মান এবং সুইডেন ভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে, সাডেচ সায়েতিং এবং নেত্র নিউজ এর যৌথ অনুসন্ধানী রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ডেথ স্কোয়াড ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (ব়্যাব) এর বর্তমান এবং সাবেক সদস্যরা নিয়মিতভাবেই জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োগ পাচ্ছে। চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ব়্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেই প্রেক্ষাপটে এই বাহিনীর সদস্যদের যেভাবে শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োগ দেওয়া অব্যাহত রয়েছে, সে বিষয়ে আপনারা কতটা উদ্বিগ্ন? কারণ যুক্তরাষ্ট্র তার দেশের জনগণের ট্যাক্সের আয় থেকে শান্তিরক্ষা বাহিনীর মোট খরচের প্রায় ২৭ শতাংশ যোগান দিচ্ছে।”

জবাবে মিলার বলেন, “এই রিপোর্টগুলো সম্পর্কে আমরা অবগত। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে শান্তিরক্ষা মিশন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। জাতিসংঘের যে যথাযথ নীতিমালা রয়েছে সেটা মেনে শান্তিরক্ষা মিশনে যারা নিয়োগ পাবে তারা যেনো মানবাধিকারের সুরক্ষার পক্ষে থাকে তা নিশ্চিত করাটা জরুরি।”

জাতিসংঘের এসংক্রান্ত নীতিমালা অনুসারে সংস্থাটি চায় শান্তিরক্ষা মিশনে যেসব দেশ তাদের পুলিশ এবং সেনা সদস্যদের নিয়োগ দিবে, নিয়োগকৃতরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত নয়, বলে মন্তব্য করেন এই মুখপাত্র।

অপর এক প্রশ্নে দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাপক আলোচিত সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ এর কথা উল্লেখ করে এই প্রতিবেদক জানতে চান, “বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের ব্যাপক দুর্নীতির বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২ ধাপে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো এজেন্সি কী যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্য কোনো দেশে এই পুলিশ প্রধানের কোনো সম্পদের খোঁজ পেয়েছে কীনা? যদি তার সম্পদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র কী সেগুলো জব্দ করেছে? একইভাবে, বাংলাদেশের আরেক দুর্নীতিবাজ সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিদেশে সম্পদের কোনো তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে কীনা? অতি সম্প্রতি আপনারা তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

আপনারা কী বর্তমান সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিবেন কীনা? কারণ ক্ষমতাসীন  শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকেই এই দুই কর্মকর্তা অবাধে যা কিছু করতে মন চায় তা করার স্বাধীনতা পেয়েছেন। তারা যা করতে (দুর্নীতি) চেয়েছেন তা করেছেন কিংবা বলতে পারেন সবকিছুই করেছেন।”

জবাবে মিলার বলেন, “আপনার প্রথম প্রশ্ন প্রসঙ্গে বলছি, আমার কাছে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলার মতো  মতো কিছু নেই। দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, যেসব অভিযোগ এবং মিডিয়া রিপোর্টের তথ্যসমূহ আপনি এখানে তুলে ধরেছেন আমরা সে বিষয়ে অবগত।”

দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থানের কথা তুলে ধরে এই মুখপাত্র বলেন, “একটা বিষয়ে আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা বিশ্বাস করি যে দুর্নীতির কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়, উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয়, স্থিতিশীলতা ব্যহত হয় এবং গণতন্ত্র খর্ব হয়।”

যুক্তরাষ্ট্র দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ প্রসঙ্গে স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মুখপাত্র মিলার বলেন, “আমরা দুর্নীতি দমনকে জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছি। বিশদ এই নীতির পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে শীর্ষ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া  হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে এখন ঘোষণা করার মতো কিছু নেই। কারণ আপনি জানেন যে, নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আগে আমরা আগাম ঘোষণা করিনা।”

Youtube

বিভাগসমূহ

Recent Comments
Scroll to Top
September 20, 2024

Editor & Publisher : Dr. Kanak Sarwar

© Copyright 2019-2024 Rajnity. All Rights Reserved