অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে রাজধানীর ডেমরা, পলাশী, পল্লবীসহ মিরপুরের বিভিন্ন অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছে রিকশা চালকদের বিক্ষোভ। অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় বিক্ষুব্ধ অটোরিকশা চালকরা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এবং ট্রাফিক পুলিশের একটি বক্সে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এসময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ছোড়া গুলিতে একজন আহত হয়েছেন।
রবিবার চালকদের সঙ্গে দিনব্যাপী এসব ঘটনাও ঘটে। অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভের ফলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
আহত তার নাম সাগর চৌকদার (২৫)। আহতের দাবি, তিনি পথচারী, পেশায় দর্জির দোকানের কারিগর। তিনি রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকায় থাকেন।
আহত ওই যুবক জানান, উত্তরায় কাজ শেষে এক বন্ধুসহ বাসায় ফেরার পথে কালসী মোড়ে বিকাল ৩টার দিকে তার শরীরে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে আহত অবস্থায় তার বন্ধু তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে বিকাল সোয়া ৫টায় ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, আহত সাগর ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বিকাল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করার প্রতিবাদে এবার রাজধানীর পল্লবীর কালশীতে ট্রাফিক পুলিশের বক্সে আগুন দিয়েছে আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেসুর রহমান বলেন, কালশীতে আন্দোলনকারীরা সহিংস আন্দোলন করছে। তারা কালশী মোড়ে অবস্থিত একটি পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে।
বিকাল ৩টার দিকে অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় বিক্ষুব্ধ অটোরিকশা চালকরা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে।
মিরপুরে সড়ক অটোরিকশা চালকদের অবরোধের কারণে মেট্রোরেল ও যাত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনের দুটি গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এমআরটি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ খান বলেন, মেট্রোরেল ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনের উত্তরের দুটি গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। এ গেট দুটি বন্ধ থাকলেও অন্য গেট যথারীতি খোলা রয়েছে এবং যাত্রীরা পারাপার হতে পারছেন।
এদিকে সকাল থেকে রাজধানীর ডেমরা, পলাশী, পল্লবীসহ মিরপুরের বিভিন্ন সড়কে অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচলের দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে চালকরা। তবে বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিকে রয়েছে।
সম্প্রতি বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকায় কোনো ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানো যাবে না। এ বিষয়ে শুধু নিষেধাজ্ঞা আরোপ নয়, এগুলো চলতে যেন না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ২২ মহাসড়কে রিকশা ও ইজিবাইক নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করুন।’
বিআরটিএ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ব্যাটারি অথবা মোটরচালিত রিকশা বা ভ্যান বা অনুরূপ শ্রেণির থ্রি-হুইলারএর কারণে ঢাকা মহানগরীতে সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ফিটনেসের অনুপযোগী, রংচটা, জরাজীর্ণ ও লক্কড়-ঝক্কড় মোটরযান চালানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ গণ্য করে ঢাকাতে ফিটনেসবিহীন অটরিকশা বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যথায় এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Recent Comments