September 20, 2024
Latest news

বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে বেতন না দেওয়া মালয়েশিয়ান কোম্পানিগুলো

মালয়েশিয়া এবার বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় বেশ সোচ্চার হয়েছে। বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশি কর্মীদের বেতন না দেওয়া মালয়েশিয়ান কোম্পানি, মুলিয়াওন এনার্জি এসডিএন বিএইচডিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া মালয়েশিয়ায় মিছিল করা প্রায় সাত শতাধিক বাংলাদেশি কর্মীদের ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ হওয়া এবং শ্রম আইন লঙ্ঘন করার দায়ে দেশটির ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর উক্ত কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জাবাতান তেনাগা কেরজা সেমেনানজুং মালয়েশিয়া (জেটিকে) কর্মকর্তারা উক্ত কোম্পানির নিয়োগকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে শ্রম আদালত ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের নিয়োগকর্তাকে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৫৫৭ মিলিয়ন রিঙ্গিত বকেয়া বেতন পরিশোধ করার নির্দেশ দেন।

দেশটির অনলাইন, মালয় মেইল জানিয়েছে, চাকরির দিয়ে বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ায় নিয়ে এসে অমানবিক পরিস্থিতিতে ফেলে দেশটির জোহর রাজ্যের পেঙ্গেরাংয়ের একটি কোম্পানি। মুলিয়াওন এনার্জি এসডিএন বিএইচডি নামের ওই কোম্পানিটি ভুয়া চাকরি দেখিয়ে সে দেশে কর্মী নিয়েছে। পরে মালয়েশিয়ার জোহর অঞ্চলের শ্রম আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে অর্ধেক বেতন পরিশোধের শর্তে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে রাজি হয়েছিল কোম্পানিটি।

এদিকে, গত বছরের অক্টোবর থেকে বেকার দিনযাপন করা এই কর্মীরা বাকি অর্ধেক বেতন কবে নাগাদ পাবে, সেই নিশ্চয়তা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতের নির্দেশও দিয়েছিলেন আদালত।

কিছু মালয়েশিয়ান কোম্পানি বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীদের বেতন দিতে ব্যর্থ হলে এই বছরের শুরুতে ৭৩০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী দশটি দলে ভাগ হয়ে দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব লেবারে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়োগদানকারী কোম্পানিকে বেতনের বিষয়টি সুরহার নির্দেশ দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। সেই নির্দেশনা মোতাবেক প্রায় ১ মিলিয়ন রিঙ্গিত বাংলাদেশি কর্মীদের পাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো টাকাই পরিশোধ করেনি কোম্পানির মালিক পক্ষ।

দেশটির লেবার ডিপার্টমেন্টের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে গত বৃহস্পতিবার, কয়েকটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অভিযোগকারীদের উপর আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে ১০টি ফাইল খোলা হয়েছিলো, যার মধ্য থেকে ৬টি ফাইলের ব্যাপারে অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন দেশটির ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর।

ডিরেক্টর-জেনারেল অফিসে এ কেইসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র দেশটির সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে যে, যে প্রক্রিয়ায় বিষয়গুলো এগোচ্ছে তাতে এটা নিশ্চিত যে, এই কোম্পানিগুলো শাস্তির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো যোগাযোগ করলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি উক্ত কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম গত ফেব্রুয়ারিতে ৭৩৩ বাংলাদেশি কর্মী এবং নিয়োগকারী ফার্মের মধ্যে মধ্যস্থতার নির্দেশকে একটি ল্যান্ডমার্ক কেস হিসেবে বর্ণনা করে বিদেশি কর্মী নিয়োগ ব্যবস্থা থেকে লাভবান শিল্পগুলোকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে বলে আশা করেছিলেন। সেই সময় তিনি আরো বলেছিলেন, নিয়োগকর্তারা যদি দোষী সাব্যস্ত হন তবে তাদের ব্লক লিস্টেড করা হবে এবং বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে তাদের কোটা বাতিল করা হবে।

এদিকে, মাইগ্রান্ট রাইটসের কর্মীরা এ বিবৃতির সমালোচনা করে বলেছিলেন যে, মধ্যস্থতার এ নির্দেশ বিদেশি কর্মী নিয়োগের নামে মানব পাচারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়।

তবে, মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যৎসামান্য চেষ্টার জন্য মালয়েশিয়া বরাবরই সমালোচিত হয়ে আসছে।

Youtube

বিভাগসমূহ

Recent Comments
Scroll to Top
September 20, 2024

Editor & Publisher : Dr. Kanak Sarwar

© Copyright 2019-2024 Rajnity. All Rights Reserved