September 20, 2024
Latest news

দুবাইয়ে ৫৩২ জন বাংলাদেশির বাড়ি-ফ্ল্যাট

দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় প্রকাশিত (১৬ মে ২৪)https://mzamin.com/news.php?news=110101

দুবাইয়ে আবাসন খাতে সম্পদের পাহাড়। আর এই সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বিশ্বের ধনী ব্যক্তিরা। তার মধ্যে আছেন বিভিন্ন রাজনীতিক, অপরাধী, অর্থ পাচারকারী এবং নিষেধাজ্ঞা পাওয়া লোকজন। তালিকায় আছেন ৩৯৪ জন বাংলাদেশিও। ২০২২ সালে তারা দুবাইয়ে ৬৪১টি সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর মূল্য ২২ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। তবে এসব বাংলাদেশি কারা তাদের নাম বা পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তালিকায় আছেন ভারতীয়রাও। তার মধ্যে ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানি অন্যতম। আছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির পরিবারের সদস্যরাও।

‘দুবাই আনলক্‌ড’ শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এই অনুসন্ধানী প্রকল্পে সমন্বয় করেছে অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) ও নরওয়ের ই- টোয়েন্টিফোর। এতে অংশ নিয়েছে ৫৮টি দেশের ৭৪টি সংবাদমাধ্যম।  তা প্রকাশ করেছে ট্যাক্স অবজারভেটরি ডট ইইউ সহ বিভিন্ন মিডিয়া। এতে বলা হয়, ২০২০ সালে ৪০৫ জন বাংলাদেশি দুবাইয়ে ৬৫৭টি সম্পদের মালিক হয়েছিলেন। এর মূল্য ছিল ২১ কোটি ১২ লাখ ডলার। এতে আরও বলা হয়, সিটি-ওয়াইজ ২০২০ সালে ৫৬২ জন বাংলাদেশি এমন সম্পদের মালিক ছিলেন। এর মূল্য ছিল ৩৭ কোটি ৫৩ লাখ। কিন্তু ২০২২ সালে এমন বাংলাদেশির সংখ্যা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৫৩২ জনে। তাদের সংখ্যা কমলেও সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই রিপোর্টে দেখা গেছে, দুবাইয়ে সবচেয়ে  বেশি সম্পদ রয়েছে ভারতীয়দের।  সেখানে ৩৫ হাজার প্রপার্টির মালিক হয়েছেন ২৯ হাজার ৭০০ ভারতীয়। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন পাকিস্তানিরা। দেশটির ১৭ হাজার নাগরিকের দুবাইয়ে ২৩ হাজার প্রপার্টি রয়েছে। এর মূল্য ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার।

দুবাইয়ের ভূমি দপ্তরসহ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ফাঁস হওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ অনুসন্ধান চালানো হয়েছে। এতে বিশেষ করে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিদেশিদের সম্পদের মালিকানার বিস্তারিত চিত্র উঠে এসেছে। এসব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ। প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ও সংঘাত নিয়ে গবেষণা করে থাকে। পরে এসব তথ্য-উপাত্ত ই- টোয়েন্টিফোর এবং ওসিসিআরপি’র সঙ্গে  শেয়ার করে প্রতিষ্ঠানটি। এই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় অংশ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বসও। সব মিলিয়ে ফোর্বস ২২ ধনকুবের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ৬০  কোটি ডলারের বেশি মূল্যের ৭৬টি সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে। বিশ্বের চারটি মহাদেশের ১০টি দেশ থেকে এসেছেন তারা। ফোর্বসের প্রতিবেদনের শুরুতেই রয়েছে ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির নাম। দুবাইয়ের পাম জুমেইরাহ কৃত্রিম দ্বীপে তার আনুমানিক ২৪ কোটি ডলারের সম্পদ রয়েছে।  দেশটির আরেক নাগরিক এম এ ইউসুফ আলি ও তার পরিবারের পাম জুমেইরাহ, দুবাই মেরিনা ও ইন্টারন্যাশনাল সিটিতে ৭ কোটি ডলার মূল্যের সম্পদ রয়েছে। যুক্তরাজ্য, মিশর, সাইপ্রাসের নাগরিকদেরও সম্পদ রয়েছে দুবাইয়ে। গোপনে সম্পদ গড়া ব্যক্তিদের এ তালিকায় রয়েছে দারিদ্র্যপীড়িত ও যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের অন্তত সাত নাগরিকের নামও। তাদের মধ্যে ছয়জন রাজনৈতিক ও একজন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তি। পাকিস্তানের ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া নথি অনুযায়ী, দুবাইয়ে ১৭ হাজার পাকিস্তানি সম্পদের মালিক। তবে তথ্য-উপাত্ত ও অতিরিক্ত সূত্র ব্যবহার করে এ সংখ্যা ২২ হাজারের মতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। এ তালিকায় নাম রয়েছে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, বাখতাওয়ার ভুট্টো জারদারি ও আসিফা ভুট্টো জারদারি; স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  মোহসিন নাকভির স্ত্রী মিসেস আশরাফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের  ছেলে হুসাইন নওয়াজ এবং আলোচিত সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার ছেলে সাদ সিদ্দিক বাজওয়ারের। দেশটির সাবেক  সেনা শাসক পারভেজ মোশাররফসহ বহু সাবেক জেনারেলের সম্পদ থাকার তথ্য তুলে ধরেছে ডন। এ ছাড়া তালিকায় চীন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাশাপাশি ইয়েমেন, নাইজেরিয়া ও কেনিয়ার মতো  দেশের নাগরিকরাও রয়েছেন। আরও রয়েছেন নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা মিয়ানমারের একজন অস্ত্র ব্যবসায়ী। এদিকে গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত এক তালিকায় দেখা গেছে, আমিরাতে বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন নিবন্ধিত  কোম্পানির সংখ্যা বাড়ছে। ওই বছরের  কেবল প্রথমার্ধেই (জানুয়ারি থেকে জুন) দুবাই চেম্বার অব কমার্সে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সদস্যপদ নেয়ার হার ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। ছয় মাসে বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন ১ হাজার ৪৪টি কোম্পানি দুবাই চেম্বারের সদস্যপদ নিয়েছে। তাতে দুবাই  চেম্বারের সদস্যপদ পাওয়া বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন কোম্পানির  মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৭৫টি। দুবাইয়ে বহু বাংলাদেশির অবৈধ সম্পদ রয়েছে বলে মনে করা হয়।

Youtube

বিভাগসমূহ

Recent Comments
Scroll to Top
September 20, 2024

Editor & Publisher : Dr. Kanak Sarwar

© Copyright 2019-2024 Rajnity. All Rights Reserved