নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটি সত্যিকার অর্থে সুষ্ঠ অবাধ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা সকল সংকট সমাধান করতে পারি। কারণ আমরা মনে করি সমস্ত সংকটের মূলে রয়েছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ফিরে পাওয়া।
আজ শনিবার বনানীতে পিলখানা ট্রাজেডির শহীদদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির জীবনে একটি দুঃখজনক ও কলঙ্কিত দিন। ২০০৯ সালের এই দিনে আমরা আমাদের সীমান্তরক্ষী বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বাহিনীর প্রায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হারিয়েছি যাদেরকে একটি বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত নির্মমভাবে পরিবার-পরিজন সহ হত্যা করা হয়। এবং একটা ভয়াবহ ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হয়। যে সকল সেনা সদস্যদের হত্যা করা হয় তারা যেমন বাহিনীতে চৌকস কর্মকর্তা ছিলেন তেমনি তারা দেশের সম্পদ ছিলেন আজকের এই দিনে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং মাগফেরাত কামনা করছি পরম করুনাময় আল্লাহ যেন তাদেরকে বেহেশত নসিব করেন।
বিএনপি মহাসচিব হলেন ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত ষড়যন্ত্র অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কাজ করেছে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আমাদের যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আমাদের যে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সেদিন প্রচণ্ড ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। ৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ও আমরা এতজন সেনা কর্মকর্তাকে হারাইনি। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বড় যে ক্ষতি হয়েছে, উদ্দেশ্য ছিল আমাদের যে গর্বিত সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি বিডিআর বিদ্রোহ ট্রাজেডির ঘটনায় যেভাবে তদন্ত হওয়া দরকার ছিল সেভাবে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদেরকে এবং এর পিছনে যারা ছিলেন তাদেরকে বের করে নিয়ে আসা। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সেই তদন্তকার্যক্রম সম্পূর্ণ হয়নি। মামলা হয়েছে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে সাজা হয়েছে কিছু মানুষের যাবজ্জীবন হয়েছে কিন্তু বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে উঠে আসা 7 মতো সৈনিক যারা দাবি করেন তারা সম্পূর্ণ নির্দোষ তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা এখনো শেষ হয়নি। বেশ কয়েকদিন পূর্বে আমি জেলখানায় গিয়েছিলাম তখন দেখেছি ১৩-১৪ বছর ধরে অনেক বিডিয়ার সৈনিক মানবতার জীবন যাপন করছেন। আমি দাবি করছি অতি দ্রুত এদের মামলা কার্যক্রম নিষ্পত্তি করে মুক্তির ব্যবস্থা করে পরিবার-পরিজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব দল মত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে রক্ষা করতে চাই। এর জন্য আজকে যেটা সবচেয়ে বড় প্রয়োজন তা হচ্ছে জাতীয় ঐক্যবদ্ধ হওয়া। যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আমাদের মূল চেতনা ছিল ৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে মনে করি সমস্ত চলমান সংকটের মূলেই রয়েছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ফিরে পাওয়া ও উদ্ধার করা। এবং আমরা কেবলমাত্র একটি সত্যিকার অর্থে সুষ্ঠ অবাক সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেই সংকট সমাধান করতে পারি।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা কারা জড়িত এটা উদ্ধার করবেন সেনাবাহিনীর যেসকল কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট তদন্তে কমিটিতে আছেন যারা দায়িত্বে রয়েছেন। তারাই খুঁজে বের করে নিয়ে আসবেন। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে মনে করি এটা একটা চক্রান্ত ছিল দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে। আমাদের গর্বিত সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য।
বিডিআর বিদ্রোহের দিন সকাল থেকে খালেদা জিয়ার গতিবিধি আচরণ রহস্যজনক ছিল, জড়িত কিনা ভেবে দেখা উচিত আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন আমি মনে করি এটা সম্পূর্ণ দায়িত্বহীন মন্তব্য। এত বড় একটা ঘটনা যেখানে সমস্ত জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে ব্যক্তির সম্পর্কে বলা হচ্ছে তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী প্রথম মুক্তিযোদ্ধা নারী দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এখনো এখনো অন্তরীন হয়ে আছেন। তিনি সেনাপ্রধানের স্ত্রী , দেশের স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রী। আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতাদের এগুলো একেবারেই দায়ভারশন করা কথাবার্তা মূল সমস্যা না গিয়ে অন্যদিকে যেতে চান তারা কারণ এই ঘটনাগুলো তারা সেই ভাবে সমাধান করতে পারেন না।
Recent Comments