সম্প্রতি ময়মনসিংহ-৯ আসনের (নান্দাইল) সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিও নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তুহিনকে বলতে শোনা যায়, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি খোদা আমাকে এমপি বানিয়েছে, আপনারা না। কথা সত্য না মিথ্যা? পেছনের মানুষগুলো কি বোবা? আমি প্রত্যেকটা মানুষের জবাব চাই। আমাকে আপনারা ভোট দেন নাই। আমি আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসি নাই।
খবর নিয়ে জানা যায়, গত শনিবার বিকেলে নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কালিয়াপাড়া বাজারে ওয়ার্ড যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য তুহিন এসব কথা বলেন।
দুইবারের এমপির জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এমন মন্তব্যে স্থানীয় নেতাদের মাঝে সমালোচনার ঝড় বইছে। তবে ভিডিওটিকে ‘সুপার এডিটেড’ বলে দাবি করেছেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন।
ভিডিওতে এমপিকে আরও বলতে শোনা যায়, জবাব চাই, আপনাদের কাছে। জবাব মুখে দিতে হবে, পারবেন না দিতে? ভালো না লাগলে সোজা চলে যাবেন, উল্টো দিকে। আমার কোনো আপত্তি নাই। কিন্তু আমি যা কথা বলব, প্রশ্ন করব, জবাব আপনাদের দিতে হবে।
উল্লেখ্য ২০১৪ সালে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন তুহিন। সাবেক এমপি মেজর জেনারেল আবদুস সালাম ঋণখেলাপির দায়ে মনোনয়ন বাতিল হবার সুযোগে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের নির্বচনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো এমপি হন তুহিন।
এ সময় ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালামকে নিয়েও তুহিনকে কথা বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি খোদা যখন আমাকে এমপি বানাল তখন আমার সঙ্গে যিনি ছিলেন, তিনি আমার সমপর্যায়ের মানুষ ছিলেন না। তিনি অনেক বড় মানুষ ছিলেন। উনি দেখতে সুন্দর, আমার চেয়ে দুই, তিন, পাঁচ, ছয় ইঞ্চি লম্বা ছিলেন। এ দেশের মানুষ কি তখন ভেবেছিল- জেনারেল সাহেবের (সাবেক মেজর জেনারেল আব্দুস সালাম) হঠাৎ করে বিদায় হবে আর তুহিনের হঠাৎ করে নান্দাইলে আগমন হবে?
এমপি তুহিন দাবি করেন, নান্দাইলের মানুষ যখন অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিল, আলেম সমাজ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পারত না, নর্তকীর নাচের আওয়াজে মসজিদে ফজরের আজান দিতে পারত না- ঠিক তেমনি এক মুহূর্তে সাবেক সাংসদ মেজর জেনারেল আব্দুস সালামকে জব্দ করে খোদা আমার মতো একজন তুচ্ছ মানুষকে এমপি বানালেন।
এ বিষয়ে তুহিন সমকালকে বলেন, এই ভিডিও সুপার কাট করা। আমার প্রতিপক্ষ এটি করেছে। এমন কোনো কথাই আমি বলিনি। আমার কথা সুপার কাট করে পেস্টিং করা করা হয়েছে।
ওই সম্মেলনে উপস্থিত থাকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ জুয়েল। সংসদ সদস্যের বক্তব্যে এ ধরনের কথা ‘ছিল না’ বলে দাবি করে তিনি বলেন, এমপি সাহেব এমন কথাই তার বক্তব্যে বলেননি। একটি কুচক্রি মহল সুপার এডিট করে ভিডিওটি ফেইসবুকে একটি ফেইক আইডি থেকে ছড়িয়ে দিয়েছে। আমরা তাকে খুঁজছি; তাকে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্মেলনে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক বাহার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আজিজুল ইসলাম, স্থানীয় চেয়ারম্যান মোছা. তাসলিমা আক্তার ও যুবলীগ নেতা মো. শাহজাহানও উপস্থিত ছিলেন বলে জানান হাসান মাহমুদ জুয়েল।
Recent Comments